1. shadhinsomoy.com@gmail.com : স্বাধীন সময় : স্বাধীন সময়
  2. info@www.shadhinsomoy.com : স্বাধীন সময় :
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪২ পূর্বাহ্ন
Title :
সিট ৪৬০, ঢোকানো হয়েছে সাড়ে ৬০০’র বেশি দর্শক—ক্ষুব্ধ বরবাদ প্রযোজক রাতে ঘরে মিলল স্ত্রীর মরদেহ, দুপুরে স্বামীর মা নিজেই বঁটি দিয়ে দুই সন্তানকে হত্যা করেছেন : পুলিশ বিসিবিতে দুদকের সেই অভিযান নিয়ে যা বললেন ফারুক ‘ঋতুস্রাবের যন্ত্রণা সহ্য করলে পারমাণবিক যুদ্ধ বাঁধাতেন পুরুষরা’ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মিথ্যা মামলায় হয়রানি না করার নির্দেশ পুলিশকে দেওয়া আছে ‘ওয়ারেন্টি দিচ্ছি, দেশের মানুষ নিরাপত্তা ও সম্মান নিয়ে বাঁচবে’ ডিএনসিসির ৫৪ ওয়ার্ডে শুরু হচ্ছে ফুটবল টুর্নামেন্ট নিকারাগুয়ায় বিরোধীদের দমন-পীড়ন ২৫০ জনের বেশি সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশকে হতাশ করে জয়ের দিকে এগুচ্ছে পাকিস্তান

গলায় জুতার মালা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্তায় তোলপাড়, গ্রেফতার ৫

  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

বিজ্ঞাপন

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে গলায় জুতার মালা দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে হেনস্থা করার ঘটনায় চলছে তোলপাড়। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন, রাজনৈতিক এবং সুশীল সমাজে নানা আলোচনা সমালোচনা চলছে। এরই মাঝে স্থানীয় বিএনপি এবং মুক্তিযোদ্ধারা ভুক্তভোগীর পক্ষে মিছিল মানববন্ধন করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ ৫ জনকে  গ্রেফতার করেছে।

ঘটনাটি নিয়ে কোনো মহল যেন ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখছে প্রশাসন। তাই জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের দাবি পূর্ব বিরোধের জের ধরেই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। এদিকে ভাইরাল ভিডিও দেখে ঘটনায় জড়িত ৫জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- চৌদ্দগ্রামের কুলিয়ারা গ্রামের ইসমাইল হোসেন মজুমদার (৪৩), মো. জামাল উদ্দিন মজুমদার (৫৮), ইলিয়াছ ভূঁইয়া (৫৮), কুলিয়ারা জামে মসজিদের ইমাম আবুল কালাম আজাদ (৪৮), ইমতিয়াজ আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ (১৯)। অপরদিকে দুই দিন অতিবাহিত হলেও এ ঘটনায় মামলা হয়নি। মামলার বাদী ভুক্তভোগী পরিবার হবে নাকি পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে- এমন দোটানা চলছে।

জানা গেছে, সোমবার দুপুরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কুলিয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করা হয়। এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর এ নিয়ে দেশব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশ আসার পর থেকেই পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক টিম মাঠে অভিযান শুরু করে। রোববার ওই ঘটনার পরই প্রাণভয়ে মুক্তিযোদ্ধা কানু এলাকা ছাড়েন। পরিবার জানিয়েছে তিনি বর্তমানে ফেনীতে অবস্থান করছেন।

বিজ্ঞাপন

এদিকে পুলিশ জানিয়েছে ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে এরই মধ্যে জড়িতদের শনাক্ত করা হয়েছে। ৫ জনকে গ্রেফতার করা হলেও জড়িত বাকিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। স্থানীয় সূত্র বলছে, মুক্তিযোদ্ধা কানু ছিলেন উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি ও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তার সঙ্গে স্থানীয় সাবেক এমপি ও রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হকের ছিল দলীয় বিরোধ। এলাকায় ২০১৬ সালে যুবলীগ নেতা রানা হত্যা মামলায় তিনি (কানু) ও তার ছেলে বিপ্লব ছিলেন চার্জশিটভুক্ত আসামি। এ মামলায় কানু গ্রেফতারও হন।

পুলিশ বলছে, এলাকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে প্রবাসী আবুল হাসমের পরিবারের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পুরো নেতৃত্ব দেন জামায়াত সমর্থক আবুল হাসেম। জামায়াত ঘটনার সঙ্গে দলের কারো সম্পৃক্ততার বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও সোমবার ঘটনায় জড়িত থাকায় দুই সমর্থককে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন। তারা হচ্ছেন- চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কুলিয়ারা গ্রামের মৃত আবদুল বারেকের ছেলে প্রবাসী আবুল হাশেম ও মৃত শফিকুর রহমানের ছেলে মু. অহিদুর রহমান। ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজে তাদের নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে।

জামায়াতে ইসলামী কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা শাখা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুইজনকে বহিষ্কারের কথা নিশ্চিত করেছে। ওই মুক্তিযোদ্ধার ছেলে স্থানীয় বাতিসা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, আমরা জীবন নিয়ে শঙ্কিত। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে টিকে থাকতে পারব না। বাড়িতে গেলে কে নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেবে। বাড়ি ঘর থেকেও কেন ফেনীতে ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে। তবুও আমি আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলছি। আসামিদের তালিকা চূড়ান্ত করা আছে। এখন পুলিশ প্রশাসন বাদী হয়ে মামলা করলে ভালো হয়।

বিজ্ঞাপন

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আক্তারুজ্জাম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, জাতির বীর শ্রেষ্ঠ সন্তানের লাঞ্ছিত করার বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি এবং তাৎক্ষনিক ভাবে ভিডিও ফুটেজে থাকা ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আটক করতে অভিযান পরিচালনা করি। অভিযানে ৫ জনকে আটক করতে সক্ষম হই। এর মধ্যে আটককৃতরা জানান- ভিকটিম বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুর (৭৮) সঙ্গে একই এলাকার আবুল হাশেম মজুমদারের (৪৫) দীর্ঘদিন যাবত সামাজিকভাবে বিরোধ চলে আসছিল।

২০০৮ সালে কুলিয়ারা হাইস্কুলে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু স্কুলের ভোট কেন্দ্র থেকে আবুল হাশেম মজুমদারের বড় ভাই আব্দুল হালিমকে মারধর করে কলার ধরে টেনে এনে পানিতে ফেলে দিয়ে অপদস্থ করেন। আব্দুল হালিম ২০২৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন। ভাইয়ের অপমানের প্রতিশোধ নিতে ওইদিন আবুল হাশেম পাতড্ডা বাজার থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুকে ধরে কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নিয়ে আসেন।

এলাকার লোকজন সেখানে জমায়েত হলে তাদের কাছে আবুল হাশেম বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুর কি বিচার করা যায় জিজ্ঞাসা করেন। সেখানে অবস্থানরত নয়ন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুকে গ্রামের সব মানুষের কাছে মাপ চাইতে বলেন এবং এলাকা থেকে চলে যেতে বলেন। এমনকি কুমিল্লা জেলা আউট হয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। তিনি বাড়িতে যেতে চাইলে ব্যক্তিদ্বয় তাহাকে বাড়িতে যেতে বারণ করেন। এ সময় উপস্থিত লোকজন আরও বলেন- আমরা বিগত দিনে বাড়িতে থাকতে পারি নাই।

গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ২২ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু এলাকায় প্রবেশ করলে আবুল হাশেমের সামনে পড়ে। এর পর সেই অপ্রীতিকর ঘটনাটি ঘটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ফুটেজ দেখার পর থানা পুলিশ ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে গিয়ে তার নিকট হতে ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করে। কিন্তু তাকে এলাকাতে পাওয়া না গেলেও তিনি বর্তমানে নিরাপদ জায়গায় অবস্থান করছেন বলে তার ঘনিষ্ঠ লোকজন জানান।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে থানার ওসির সরকারি নম্বরসহ বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি সংঘটিত হওয়া অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়ে কোনো কিছু বলতে রাজি হননি। এছাড়া অভিযুক্তদের সম্পর্কেও কোনো তথ্য প্রকাশ করেননি। ভুক্তভোগীকে আইনগত সব সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করা হলেও তিনি কোনো ধরনের অভিযোগ করতে রাজী হননি। ওসি জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুর বিরুদ্ধে হত্যা, তথ্য প্রযুক্তি, মারামারি, রাজনৈতিক মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তিনি কারাভোগ করেছেন।

উল্লেখ্য, গত রোববার দুপুরে চৌদ্দগ্রামের নিজ এলাকা কুলিয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ওই মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করা হয়। জুতার মালা ও এলাকায় থেকে ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়ার ১ মিনিট ৪৬ মিনিটের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়- মুক্তিযোদ্ধার কানুর গলায় জুতার মালা দিয়ে তাকে এলাকা এমনকি কুমিল্লায় থাকতে পারবেন না বলে হুমকি দেওয়া হয়। এ সময় ক্ষমা চেয়ে ও এলাকায় আসবেন বলে নিশ্চয়তা দিয়ে তিনি এলাকা ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে তিনি ফেনীতে চলে যান। তার গ্রামের বাড়ি ঘটনাস্থলের অদূরে লুদিয়ারা গ্রামে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© All rights reserved
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট