1. shadhinsomoy.com@gmail.com : স্বাধীন সময় : স্বাধীন সময়
  2. info@www.shadhinsomoy.com : স্বাধীন সময় :
বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:০৬ অপরাহ্ন

ছদ্মবেশী চক্রের ভয়ংকর ফাঁদ টার্গেট ৫ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারী, হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা বিকাশ-নগদে লেনদেন করলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে অপরাধীরা

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৫৮ Time View

রাজধানীর ক্ষিলক্ষেত এলাকা থেকে ফেসবুকে একটি লাইফস্টাইল পেজ চালান শারমিন আক্তার। বিক্রি করেন পোশাকসহ নানা গৃহস্থলি সামগ্রী। ১০ লক্ষাধিক টাকা বিনিয়োগ করে মাসে ৬০-৭০ হাজার টাকা তুলতে হিমশিম খান।

অথচ, কোনো পণ্য বিক্রি ছাড়াই শুধু ১৩টি ফেসবুক পেজ খুলে নামমাত্র মূল্যে নামিদামি ব্র্যান্ডের মোবাইল বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে অল্প দিনেই মানুষের ২৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার কলেজপড়ুয়া মশিউর রহমান (১৯)। একাধিক ভুক্তভোগীর পাশাপাশি স্মার্টফোনের একটি চীনা ব্র্যান্ড র‌্যাব-৭-এর কাছে অভিযোগ দিলে নজরদারি শুরু করে এ সংস্থাটি। অবশেষে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনাটি ২০২২ সালের। একই অভিযোগে গত বছর জুনে রাজধানীর ভাটারা ও মোহাম্মদপুর থেকে প্রতারক চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।

চলতি বছর এ ধরনের প্রতারণা বেড়েছে বহুগুণে। বেড়েছে প্রতারণার ধরনও। প্রযুক্তির উন্নয়নের পাশাপাশি যুবকদের বেকারত্বের সুযোগ নিয়ে বর্তমানে বিভিন্ন সফটওয়্যার, ট্রেনিং কোর্স, ওটিটি সার্ভিস, চ্যাট জিপিটি, ট্রুকলার বা টিন্ডারের মতো ডেটিং অ্যাপের প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন সস্তায় দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়েও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকচক্র। রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকার বাসিন্দা মাইনুল হাসান বলেন, ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য আমি নিয়মিত অনলাইন থেকে বিভিন্ন কোর্স কিনি। বিকাশে টাকা পাঠালে কোর্সের লিঙ্ক দেয়। বর্তমানে লার্নিং বাংলাদেশ থেকে আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্সের ওপর একটা কোর্স কিনে প্রাকটিস করছি। প্রাকটিসের জন্য গতকাল ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেখে স্ট্রিমিং বাংলাদেশ (Streaming Bangladesh) নামের একটি পেজ থেকে ৭৯৯ টাকা দিয়ে চ্যাট জিপিটির একটি প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন কিনি। বিজ্ঞাপনের নিচে অনেকের ইতিবাচক রিভিউ দেখে বিশ্বাস হয়। বিজ্ঞাপনে দেওয়া হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে (০১৯১৮-৮১৭৬৭৫) যোগাযোগ হয়। সেখানে দেওয়া বিকাশ নম্বরে (০১৭৮২-৬৫৩০৭০) টাকা পাঠাই। কিন্তু টাকা পাঠানোর পর আর পণ্য পাইনি। একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেনি। নিশ্চয়ই আরও অসংখ্য মানুষ এভাবে টাকা পাঠিয়ে প্রতারিত হয়েছেন এবং হচ্ছেন।

ডেটা রিপোর্টালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে দ্রুত বাড়ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ৯ দশমিক ৭ মিলিয়ন নতুন ব্যবহারকারী যোগ হয়েছে। ২০২৪ সালের শুরুতে বাংলাদেশে মোট সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীর সংখ্যা পৌঁছেছে ৫ কোটি ৩০ লাখ। এই বিপুল সংখ্যক মানুষই টার্গেটে পরিণত হচ্ছে প্রতারকদের।

নজরদারির অভাবে প্রতারণার মাধ্যমে রাতারাতি ধনী হওয়ার মাধ্যম হিসেবে পরিণত হয়েছে ফেসবুক। শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইনস্ট্রাগ্রাম আইডির নিরাপত্তা দুর্বলতা ঠিক করে দেওয়ার নামে বিভিন্ন ব্যক্তির আইডির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এক বছরেই কোটিপতি বনে যান শামীম আহমেদ জয় (২৩) এবং মোহাম্মদ স্বাধীন আহমেদ (১৮) নামের আপন দুই ভাই। এক কানাডিয়ান প্রবাসীর আইডির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেল করে ১০ হাজার ডলার হাতিয়ে নেওয়ার পর তাদের এই প্রতারণার ইতিটানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ভুক্তভোগীর বাবা ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিটিসি)-এর সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ করলে গত এপ্রিলে রাজধানীর ডেমরা এলাকা থেকে দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

শামীমের কাছে পাওয়া যায় প্রবাসীদের প্রায় ৫০০ ফেসবুক অ্যাকাউন্টের লগইন করার প্রয়োজনীয় ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড। তারা আইডির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভুক্তভোগীর স্বজনদের মেসেজ দিয়ে মায়ের অসুস্থতার কথা বলে টাকা চাইতেন। আইডিতে থাকা ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নিতেন টাকা। আইডির কোথাও ভুক্তভোগীর নগ্ন বা একান্ত গোপনীয় ছবি বা তথ্য পেলে বড় অঙ্কের টাকা আদায় করত। ফেসবুকে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরির লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে জিম্মি করে টাকা আদায়ের অভিযোগে গত অক্টোবরে প্রতারক চক্রের সাতজনকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির খিলগাঁও থানা পুলিশ। ভুক্তভোগীরা বলছেন, ফেসবুকে প্রতারণায় ফোন নম্বর ও বিকাশ বা নগদ অ্যাপ ব্যবহার করছে প্রতারকরা। জাতীয় পরিচয়পত্র ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট ছাড়া তো সিম কেনা বা বিকাশে অ্যাকাউন্ট করা যায় না। তবুও এসব প্রতারণা বাড়ছে। লাখ লাখ মানুষ প্রতিদিন প্রতারণার শিকার হলেও ঝামেলা মনে করে অধিকাংশই এ ব্যাপারে অভিযোগ করেন না। আবার বছরের পর বছর ঘুরলেও অনেক অভিযোগের সুরাহা হয় না।

 

এ কারণেও অনেক ভুক্তভোগী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারস্থ হন না। সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন (সিসিএ ফাউন্ডেশন) ২০২৩ সালের এক গবেষণা বলছে, ২০১৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে নতুন ধরনের সাইবার অপরাধের মাত্রা প্রতিনিয়ত বেড়েছে। অনলাইনে পণ্য কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন মানুষ। অ্যাপের মাধ্যমে ঋণের নামে ফাঁদের মতো অভিনব পদ্ধতিতে নানা ধরনের আর্থিক অপরাধের প্রবণতা বাড়লেও আইনের শরণাপন্ন হওয়ার প্রবণতা কমছে। প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সাইবার অপরাধের ঘটনায় ২০১৮ সালে মামলার সংখ্যা ৬১ শতাংশ থাকলেও ২০২৩ সালে তা ২০ শতাংশে নেমে আসে। ৫৫ শতাংশের বেশি ভুক্তভোগী সাইবার আইন সম্পর্কে জানেন না এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের অপরাধ থেকে নিজেদের রক্ষা করার বিষয়ে তাদের কোনো ধারণা নেই।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© All rights reserved
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট