1. shadhinsomoy.com@gmail.com : স্বাধীন সময় : স্বাধীন সময়
  2. info@www.shadhinsomoy.com : স্বাধীন সময় :
বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:০৩ অপরাহ্ন

মহাবিপন্ন ঘড়িয়াল, দেশের প্রথম প্রজনন কেন্দ্র রাজশাহীতে

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১ Time View

নদীমাতৃক বাংলাদেশের পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদ এক সময় ছিল ঘড়িয়ালের আপন ঠিকানা; কিন্তু জলজ এই নিরীহ সরীসৃপ প্রাণীটি এখন মহাবিপন্ন। নানা কারণে প্রজনন হার কমে যাওয়ায় একপ্রকার বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে ঘড়িয়াল।

এমন সংকটময় প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো গড়ে উঠল ঘড়িয়ালের প্রজনন কেন্দ্র। সামাজিক বন বিভাগের রাজশাহীর পবা নার্সারির একটি পুকুরে এটি করা হয়েছে।

 

মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর সাফারি পার্ক থেকে এনে দুটি ঘড়িয়াল অবমুক্ত করা হয় এই প্রজনন কেন্দ্রে। একটি পুরুষ ও একটি স্ত্রী ঘড়িয়াল অবমুক্ত করেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী।

 

তিনি বলেন, নদী দূষণ, নাব্যতা হ্রাস, অতিরিক্ত মাছ আহরণ, অবৈধ শিকার, পাচার, ডিম নষ্ট হওয়া ও খাদ্যের সংকটের কারণে ঘড়িয়ালের প্রজননে ব্যাঘাত ঘটে। এসব কারণেই আজ তারা বিলুপ্তির পথে। রাজশাহীতে দেশের প্রথম ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে যেন এ প্রাণীর অস্তিত্ব টিকে থাকে।

 

ঘড়িয়াল অবমুক্তকরণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- উপপ্রধান বন সংরক্ষক গোবিন্দ রায়, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক ছানাউল্ল্যা পাটওয়ারী, সামাজিক বন অঞ্চল বগুড়ার বন সংরক্ষক মুহাম্মদ সুবেদার ইসলাম, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান শাহ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এএম সালেহ রেজা, আইইউসিএনের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর এবিএম সরোয়ার আলম এবং সেভ দ্য ন্যাচার অ্যান্ড লাইফ রাজশাহীর চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।

 

ঘড়িয়াল মূলত খুবই শান্ত ও উপকারী জলজ প্রাণী। এটি বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২-এর তালিকাভুক্ত একটি রক্ষিত প্রজাতি। আন্তর্জাতিকভাবে এটি সাইটিস-এর অ্যাপেন্ডিক্স-১ ভুক্ত প্রাণী এবং বর্তমানে ‘মহাবিপন্ন’ হিসেবে চিহ্নিত। এর ইংরেজি নাম Gharial এবং বৈজ্ঞানিক নাম Gavialis gangeticus।

 

ঘড়িয়াল সংরক্ষণের এ উদ্যোগ নতুন নয়। ২০১৭ সালের ১৩ আগস্ট রাজশাহীর শহীদ এএইচএ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার একটি পুকুরে ঘড়িয়ালের প্রজননের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে সময় চিড়িয়াখানায় দুটি স্ত্রী ঘড়িয়াল ছিল, যেগুলো আগে জেলেদের জালে ধরা পড়ে উদ্ধার করা হয়। এর একটিকে পাঠানো হয় ঢাকা চিড়িয়াখানায়, যার নাম রাখা হয় ‘যমুনা’। ঢাকায় ছিল চারটি পুরুষ ঘড়িয়াল। অন্যদিকে ঢাকা থেকে একটি পুরুষ ঘড়িয়াল এনে রাজশাহীর পুকুরে ছাড়া হয়, তার নাম দেওয়া হয় ‘গড়াই’। আর রাজশাহীতে আগে থেকেই থাকা স্ত্রী ঘড়িয়ালটির নাম হয় ‘পদ্মা’।

 

এই আন্তঃচিড়িয়াখানা বিনিময়ের মাধ্যমে ‘যমুনা’ ঢাকা চিড়িয়াখানায় তিনটি পুরুষ সঙ্গী পায়, আর রাজশাহীর ‘পদ্মা’ পায় ‘গড়াই’-কে। তবে আট বছরেও তাদের কোনো বাচ্চা হয়নি, কারণ ছিল প্রজননের অনুপযোগী পরিবেশ। তাই এবার আইইউসিএন এবং সামাজিক বন বিভাগের যৌথ উদ্যোগে রাজশাহীতে গড়ে তোলা হলো ঘড়িয়ালের উপযোগী প্রজনন কেন্দ্র।

 

নতুন ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্র ঘিরে নতুন করে আশার আলো দেখছেন প্রাণিবিজ্ঞানীরা ও পরিবেশবাদীরা। যদি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়, তবে ঘড়িয়াল আবার ফিরতে পারে তার প্রাকৃতিক পরিবেশে পদ্মা-মেঘনায়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© All rights reserved
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট