1. shadhinsomoy.com@gmail.com : স্বাধীন সময় : স্বাধীন সময়
  2. info@www.shadhinsomoy.com : স্বাধীন সময় :
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৫ অপরাহ্ন
Title :
সিট ৪৬০, ঢোকানো হয়েছে সাড়ে ৬০০’র বেশি দর্শক—ক্ষুব্ধ বরবাদ প্রযোজক রাতে ঘরে মিলল স্ত্রীর মরদেহ, দুপুরে স্বামীর মা নিজেই বঁটি দিয়ে দুই সন্তানকে হত্যা করেছেন : পুলিশ বিসিবিতে দুদকের সেই অভিযান নিয়ে যা বললেন ফারুক ‘ঋতুস্রাবের যন্ত্রণা সহ্য করলে পারমাণবিক যুদ্ধ বাঁধাতেন পুরুষরা’ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মিথ্যা মামলায় হয়রানি না করার নির্দেশ পুলিশকে দেওয়া আছে ‘ওয়ারেন্টি দিচ্ছি, দেশের মানুষ নিরাপত্তা ও সম্মান নিয়ে বাঁচবে’ ডিএনসিসির ৫৪ ওয়ার্ডে শুরু হচ্ছে ফুটবল টুর্নামেন্ট নিকারাগুয়ায় বিরোধীদের দমন-পীড়ন ২৫০ জনের বেশি সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশকে হতাশ করে জয়ের দিকে এগুচ্ছে পাকিস্তান

লড়াইয়ের দিনগুলো মনে পড়লে খুব ভয় করে, হাত-পা কাঁপে: মিঠুন

  • Update Time : রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

চলতি বছরের শেষ মাস। মুক্তির অপেক্ষায় তার দ্বিতীয় বাংলা ছবি ‘সন্তান’। ছবি মুক্তির আগে আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি হয়েছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। টালিউড-বলিউডের এ অভিনেতা সম্প্রতি এক সন্ধ্যায় সাক্ষাৎকারে বেঙ্গালুরুর থেকে ভিডিওকলে ধরা দিলেন। তার এ সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সাংবাদিক অভিনন্দন দত্ত।  তাকে হাতের নাগালে পাওয়া খুব কঠিন। শেষে পাওয়া গেল বেঙ্গালুরুর থেকে ভিডিওকলে। ফোন করতেই তার সহকারী ফোন হাতে দিতেই ভেসে এলো পরিচিত কণ্ঠস্বর—কী জানতে চান, বলুন। শুধু তার অনুরোধ ছিল, ছবি মুক্তি পাচ্ছে। তাই রাজনীতি নিয়ে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। পরবর্তী আধ ঘণ্টায় খোলস ছেড়ে ‘ব্যক্তি’ মিঠুনই যেন বেশি করে ধরা দিলেন।  কখনো শৈশবের দিন থেকে সুপারস্টার হওয়ার যাত্রাপথ, কখনো আবার স্ট্রাগলের কঠিন দিন থেকে পরিবার এবং অবশ্যই আগামীর পরিকল্পনা— খোলামনে কথা বললেন অভিনেতা।

প্রশ্ন: কেমন আছেন আপনি?

মিঠুন: ভালোই আছি। এই যে (ফোন তুলে দেখালেন) বেঙ্গালুরুতে আমার নতুন হোটেলের লবিতে বসে আছি। পেছনেই দেখছেন প্রবেশপথ। আপাতত এখানেই কাজে ব্যস্ত রয়েছি। সবেমাত্র হোটেলটা খুলেছে। তাই সব কিছু ঠিকঠাক রয়েছে কিনা, দেখতে হচ্ছে।

প্রশ্ন: আপনার হাতের চোট এখন কেমন আছে?

মিঠুন: লতে পারি— ২৫ শতাংশ ঠিক হয়েছে। আগের থেকে হাত অনেকটাই সোজা করতে পারছি।

প্রশ্ন: ‘সন্তান’-এর শুটিংয়ের সময় দেখেছিলাম, শটের ফাঁকে আপনি এক মনে ফোনে ভিডিও দেখতেন।

মিঠুন: আমি কিন্তু ‘রিলস’ দেখি না! আমি নানা বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করি। কিছু চোখে পড়লে, তখন হয়তো সেটা নিয়ে ইন্টারনেট ঘাঁটতে শুরু করলাম।

প্রশ্ন: কিন্তু শুনেছি, আপনি ফোন ব্যবহার করেন না। ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে পছন্দ করেন।

মিঠুন: মোবাইল তো ব্যবহার করি না। আর যে মোবাইলটা আপনি দেখেছিলেন, সেটি আমার স্ত্রীর ফোন। আউটডোরে এলে আমার হাতে দিয়ে দেন। তাতে কোথায় রয়েছি, কী করছি, ট্র্যাক করতে পারেন (হাসি)।

প্রশ্ন: আপনি ব্যস্ত মানুষ। রান্না করতে পছন্দ করেন। শুটিং না থাকলে বাড়িতে সারা দিন কীভাবে সময় কাটে?

মিঠুন: বাড়িতে থাকলে আমার ছেলেমেয়েদের জন্য অন্তত একটা পদ রান্না করতেই হবে। তা ছাড়া বাড়িতে আমার ১৮টা বাচ্চা (সারমেয়) রয়েছে। আমার বাড়িতে প্রায় ৭০০টা গাছ রয়েছে। সেগুলোর পরিচর্যা নিজের হাতে করি। এসব নিয়ে দিব্যি সময় কেটে যায়।

প্রশ্ন: ‘সন্তান’ তো বাবা-ছেলের সম্পর্কের ছবি। আপনার বাবা বসন্ত কুমার চক্রবর্তী কি খুব কড়া মানুষ ছিলেন?

মিঠুন: (হেসে) প্রচণ্ড! একসময় মনে হতো, লোকটা আমার জীবনে ভিলেন! তবে এখন বুঝতে পারি— তিনি যদি কড়া না হতেন, তা হলে আমি হয়তো মিঠুন চক্রবর্তী হতে পারতাম না। এখন মনে হয়, আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ যদি কিছু হয়, তিনি আমার বাবা। তবে এই সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে আমি বাবা-মায়েদের প্রসঙ্গে আরও একটা কথা বলতে চাই।

প্রশ্ন: অবশ্যই, বলুন না…

মিঠুন: আমরা ভাবতাম, মা-বাবা যে শিক্ষা দেন, সেটাই শ্রেষ্ঠ। আমি অন্তত সেটাই মনে করে বড় হয়েছি। কিন্তু এখন সমাজ বদলে গেছে। মানুষের চিন্তাধারা বদলে গেছে। অনেক মূল্যবোধ আমরা হারিয়ে ফেলেছি। তাই সমাজের বয়স্ক মা-বাবাদের সঙ্গে আজকে যেভাবে অন্যায় বেড়ে চলেছে, সেটিই এই ছবিতে আমরা দেখাতে চেয়েছি। আর সব থেকে বড় বিষয়— এই ছবির বাবা সব কিছু মাথা নিচু করে মেনে নেয় না, সে ছেলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে এবং শেষ পর্যন্ত মামলাও করে।

প্রশ্ন: এই ছবির শুটিংয়ের সময় রাজ চক্রবর্তী (ছবির পরিচালক) বলেছিলেন— আবেগঘন দৃশ্যে আপনার অভিনয় দেখে তার চোখে পানি এসেছিল। রাজের সঙ্গে প্রথম ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা কী রকম?

মিঠুন: (একটু ভেবে) আগে তো ও আমাকে রিয়্যালিটি শোয়ে পরিচালনা করেছে। তবে এই ছবিটার গল্পটা অসাধারণ। রাজ বলতেই আমি রাজি হয়ে যাই। ও খুবই শান্ত ও কাজটা ভালো বোঝে। ‘সন্তান’-এর মতো ছবি কিন্তু পরিচালনা করা সহজ কাজ নয়। রাজ অসাধারণ কাজ করেছে। বিশেষ করে বলেই দিচ্ছি— ছবির ক্লাইম্যাক্স কিন্তু দর্শককে কাঁদাবেই।

প্রশ্ন: ক্যারিয়ারে সাড়ে তিনশর বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন। জানতে ইচ্ছে করছে— মিঠুন চক্রবর্তীকে কি এখনো কোনো চরিত্রের জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি নিতে হয়?

মিঠুন: ওরে বাবা! নিতে হয় না নাকি! সব বাবার চরিত্র তো এক রকম নয়। এই ছবিতে যে বাবা, সে তো অন্য ছবির থেকে আলাদা। এটা ‘প্রজাপতি’র বাবা নয়। তাই আমাকে আলাদা করে ভাবতেই হয়।

প্রশ্ন: আপনার ছেলেমেয়েরা আপনাকে কতটা আগলে রাখেন?

মিঠুন: আমাকে তো সবাই বকাবকি করে (মুচকি হাসি)।

প্রশ্ন: সবচেয়ে বেশি কে বকেন?

মিঠুন: (হেসে) মেয়ে (দিশানি চক্রবর্তী) বেশি বকাবকি করে। সকাল থেকে সন্ধ্যা— মেয়ের কাছে বকুনি খাই। আমার তো একটাই মেয়ে। তাই কিছু করার নেই (হাসি)। যাদের একটিই মেয়ে রয়েছে, তারা হয়তো বিষয়টা আরও ভালো বুঝতে পারবেন। তবে আমার ছেলেরাও কিন্তু আমার প্রতি ততটাই দায়িত্বশীল। আসলে আমার সঙ্গে আমার সন্তানদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক।

প্রশ্ন: আপনার ছেলে মিমো ও নমশির সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পেরেছি, আপনাকে নিয়ে তারা খুবই গর্বিত। মন খুলে বলেন, আপনি নাকি তাদের জন্য কখনো কারও কাছে কোনো রকম সুপারিশ করেননি— এটি কি সত্যি?

মিঠুন: দুই হাজার শতাংশ সত্যি! কিন্তু আমি সবসময়েই ওদের বলেছি— তোমাদের নিজের লড়াই লড়তে হবে। আমি জানি, ওরা এখনো লড়াই করছে, খুব কষ্ট করছে। পাশাপাশি এটাও জানি, ওরা সময়ের সঙ্গে আরও শক্ত হয়েছে। কেউ বেশি পেয়েছে, কেউ কম। যেমন— নমশি এখন বিবেক অগ্নিহোত্রীর ‘দিল্লি ফাইলস’-এ অভিনয় করছে। মিমো আবার নীরজ পাণ্ডের ‘খাকি: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার’ এবং বিক্রম ভাটের ‘হন্টেড ২’-এ অভিনয় করছে। ওরা সবাই আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। কাজ নিয়ে আলোচনা হয়। মতামত বা পরামর্শ দিই। আমি গাইড করি। কিন্তু বলি— ফ্লোরে শট দেওয়ার সময় নিজেকেই সেই চরিত্রটা ফুটিয়ে তুলতে হবে।

প্রশ্ন: একজন বাবা হিসেবে আপনার কোনো আক্ষেপ রয়েছে?

মিঠুন: খুব বেশি হলে কী আর করতাম, হয়তো আদর দিয়ে ছেলেমেয়েদের মাথায় তুলতাম! কিন্তু ওরা আমার কাছে আদরও পেয়েছে, শাসনও পেয়েছে। মা-বাবার মূল্যবোধটাও পেয়েছে। বিশেষ করে পিঙ্কি (মিঠুনের স্ত্রী যোগিতা বালি) একজন অসাধারণ মা। আমি যখন শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকতাম, তখন ও একা হাতে পরিবারটাকে আগলে রাখত।

প্রশ্ন: কখনো মনে হয়, পরিবারকে আরও একটু বেশি সময় দিতে পারতেন?

মিঠুন: সে রকম মনে হয় না। কারণ খুব ব্যস্ত শিডিউল থাকলে, মাঝে হয়তো এক মাস ছুটি নিয়ে নিতাম। তারপর পরিবারকে নিয়ে বিদেশে ঘুরতে চলে যেতাম। চার-পাঁচটা দেশ ঘুরে একসঙ্গে সময় কাটিয়ে আবার ফিরে আসতাম। তবে আদর দিয়ে সন্তানদের মাথায় তোলার মতো বাবা আমি নই (হাসি)। তাই আমার মধ্যে কোনো আক্ষেপ নেই।

প্রশ্ন: আপনি তখন ছেলেমেয়েদের থেকে বকুনির কথা বলছিলেন। আপনার স্ত্রী আপনাকে বকাবকি করেন?

মিঠুন: (হেসে) আগে ও খুবই শান্ত ছিল। খুবই শান্ত মেয়ে। এখন জানি না কী হয়েছে, সব কথাতেই একটু চেঁচামেচি শুরু করে দেয়! আগে মনে হতো, এ রকম বউ ভাবাই যায় না। আর এখন মনে হয়, ওরে বাবা— এ তো ডেঞ্জারাস! এখন একটু ভয় পেতে শুরু করেছি (হাসি)।

প্রশ্ন: আপনাদের প্রজন্মের ‘পেরেন্টিং’ এবং বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে কোনো পার্থক্য লক্ষ্য করেছেন?

মিঠুন: বাবা-মায়েরা কিন্তু একই রয়েছেন। একইভাবে ভালোবেসে সন্তানদের বড় করে তুলছেন। কিন্তু ছেলেমেয়েরা বদলে গেছে। যার ফলে যাবতীয় আশান্তির সূত্রপাত। তবে আনন্দবাজার অনলাইনের পাঠকদের বলব— এই ছবিটা দেখার পর আপনারা কিন্তু বুঝতে পারবেন যে, যেখানে রয়েছেন, সেটা মা-বাবার জন্যই। জীবনে মা-বাবার অবদানকে ভুলে গেলে বেঁচে থাকা অর্থহীন।

প্রশ্ন: ক্যারিয়ারে অজস্র চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কিন্তু এখনো কোনো স্বপ্নের চরিত্রকে ধাওয়া করেন?

মিঠুন: কোনো দিনই ভাবিনি। যা এসেছে, সেভাবেই নিজেকে ভেঙেছি এবং কাজ করেছি। তবে প্রত্যেক বারেই নতুন নতুন চরিত্র পেয়েছি। আর এখন তো সিনেমাও অনেকটাই বদলে গেছে। আগে তো একই রকমের ছবি করতাম। নাচ, গান আর অ্যাকশন। একটু ভালোবাসা একটু কমেডি— ব্যস ছবি শেষ! এখন অর্থপূর্ণ চরিত্র করছি বলে অনেক বেশি প্রস্তাব আসে।

প্রশ্ন: এখন আপনি কোনো ছবিতে রাজি হওয়ার আগে কীভাবে সিদ্ধান্ত নেন?

মিঠুন: আমার মনকে নাড়া দিতে হবে। আমি চাইলে প্রতি দিন ১০টা ছবি সাইন করতে পারি— হিন্দি-বাংলা মিশিয়ে এত বেশি প্রস্তাব আসে। কিন্তু আমি রাজি হই না। বলি, পারব না। কখনো শরীর ভালো নেই-গোছের মিথ্যাও বলি। এড়িয়ে যাই। আসলে এখন আমার গল্প পছন্দ না হলে, আমি সেই ছবি করব না।

প্রশ্ন: ঋত্বিক (ঋত্বিক চক্রবর্তী) বলেছেন, এই ছবিতে প্রথমে আপনার সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে একটু ভয় পেয়েছিলেন। কেমন লেগেছে ওর অভিনয়?

মিঠুন: টেরিফিক অভিনেতা! ও কেন এ রকম বলছে জানি না। আমরা কিন্তু খুব ভালো বন্ধু হয়ে গেছি। আর বন্ধুত্ব তখনই হয়, যখন নিজেদের মধ্যে সম্পর্কটা মধুর হয়ে ওঠে। এ ছবিতে ঋত্বিক দর্শককে চমকে দেবে। এতটাই সাবলীল অভিনয়, দর্শকদের ইচ্ছে হবেই ওকে গিয়ে একটা চড় মারতে বা ওর গলা টিপে দিতে! এটাই ওর ক্রেডিট। এটাই তো ভালো অভিনয়ের দৃষ্টান্ত।

প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রিতে গত কয়েক বছর ধরেই বাংলা ছবির পরিস্থিতি নিয়ে কাটাছেঁড়া হচ্ছে। মিঠুন চক্রবর্তীর ছবি মুক্তির আগে এখনো একটা আলাদা উন্মাদনা তৈরি হয়। বিষয়টাকে কীভাবে দেখেন?

মিঠুন: এই উন্মাদনা তৈরি হয়, কারণ দর্শক জানেন মিঠুন চক্রবর্তীর ছবি মানেই সেখানে নতুন কিছু থাকবে। কিছু তো একটা ম্যাজিক থাকবে। তাই একই রকমের ছবি করলে একদিন এই উন্মাদনাও নষ্ট হয়ে যাবে। দর্শকের এই উন্মাদনাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই কিন্তু আমি প্রচুর স্বার্থত্যাগ করি। অর্থ সবাই উপার্জন করতে চান। কিন্তু খুব কম অভিনেতা আমার মতো স্বার্থত্যাগ করতে পারেন।

প্রশ্ন: আপনাকে দর্শক ফাটাকেস্টর চরিত্রে দেখেছেন। খুব জানতে ইচ্ছে করছে মিঠুন চক্রবর্তীর বায়োপিক তৈরি হলে, সেখানে কোন অভিনেতা চরিত্রটার সঙ্গে জাস্টিস করতে পারবেন বলে মনে হয়?

মিঠুন: প্রথমত এ রকম প্রস্তাব এলে আমি না বলে দিই। অনেকেই তৈরি করতে চেয়েছেন। কিন্তু আমি রাজি হইনি।

প্রশ্ন: কেন বলুন তো?

মিঠুন: আমি চাই না, আমার বায়োপিক তৈরি হোক। কারণ সেখানে শুধুই দুঃখ! আমার প্রত্যেকটা দিন স্ট্রাগল। নতুন প্রজন্মের যারা মন শক্ত করে পায়ের নিচের জমি শক্ত করার জন্য লড়াই করছেন, আমার বায়োপিক দেখলে তাদের মন ভেঙে যাবে। কেউ কেউ হয়তো অভিনয় ছেড়েই দেবেন। আর আমি সেটি চাই না। আমি শুধু একটাই কথা বলি— আমি যদি পারি, তা হলে তুমিও একদিন পারবে।

প্রশ্ন: কিন্তু স্ট্রাগলের পর আপনার প্রাপ্তির ঝুলিও তো বিশাল। সাড়ে তিনশর ওপর ছবি। জাতীয় পুরস্কার, পদ্মশ্রী, দাদা সাহেব ফালকে সম্মান…

মিঠুন: (থামিয়ে দিয়ে) নিশ্চয়ই আছে। অবশ্যই আছে। কিন্তু ৯৭ শতাংশ যন্ত্রণা এবং আমার লড়াই। আমি নিশ্চিত, এতটা কষ্ট কেউ মেনে নিতে পারবে না।

প্রশ্ন: শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও এই বয়সে পর পর অভিনয় করে চলেছেন। কখনো একঘেয়েমি লাগে না? অবসর নিয়ে কোনো ভাবনা?

মিঠুন: একদম নয়। বরং নতুন নতুন চরিত্র আমাকে আরও বেশি অভিনয় করার মনোবল জোগাচ্ছে। আমার মোটিভেশন এখনো বেঁচে রয়েছে।

প্রশ্ন: মিঠুন চক্রবর্তীর পর বাংলা থেকে জাতীয় স্তরে আর কোনো সুপারস্টার উঠে এলো না কেন?

মিঠুন: (একটু ভেবে) জানেন, উঠে আসতেই পারত। অনেকেই ছিলেন, যারা নিশ্চিত পারতেন। কিন্তু তারা তখন আমার মতো ঝুঁকি নিতে পারেননি। তারা ভাবেননি যে, যাই, একটু বম্বেতে গিয়ে চেষ্টা করি। আসলে তখন হয়তো তাদের মনে হয়েছিল, বম্বেতে সফল না হলে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিও হাতছাড়া হয়ে যাবে। এখানে তো তখন তাদের স্টারডম রয়েছে, পায়ের নিচের মাটি শক্ত। সেই নিরাপত্তাহীনতার ভয় থেকেই হয়তো তারা ঝুঁকি নিতে পারেননি। তবে এই ভাবনার মধ্যে আমি তাদের কোনো দোষ দেখি না।

প্রশ্ন: কিন্তু ‘মৃগয়া’র পর উত্তর কলকাতার গলি থেকে আজ থেকে পাঁচ দশক আগে আপনি কীভাবে ঝুঁকিটা নিয়েছিলেন?

মিঠুন: (হেসে) একটু হিম্মত চাই। কিছুটা ঝুঁকি তো ছিলই। আসলে আমি ভেবেই নিয়েছিলাম যে, আমি স্টার হব। আমাকে পারতেই হবে। আমার এই গায়ের রঙ আমাকে পিছিয়ে দিয়েছে। সেটাকে ভোলাতে হবে। ‘মৃগয়া’য় একটা আদিবাসীর চরিত্রে অভিনয় করে হিরো হলাম। সেখান থেকে জাতীয় পুরস্কার পেলাম। সেখান থেকে জাতীয় পর্যায়ে এক নম্বর হিরো— সুপারস্টার! তার পর সেই স্টারডমকে ধরে রাখা। প্রচুর ঝুঁকি নিয়েছি জীবনে। লড়েছি এবং গন্তব্যে পৌঁছেছি।

প্রশ্ন: শেষ প্রশ্ন। আজকে কখনো আপনার লড়াইয়ের দিনগুলোকে ফিরে দেখলে কী মনে হয়?

মিঠুন: (একটু ভেবে) খুব ভয় লাগে। হাত-পা কাঁপে! নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকি।

প্রশ্ন: জীবনে তো আপনি এত কিছু পেয়েছেন। তারপরও নিরাপত্তাহীনতা!

মিঠুন: (ভাবুক মনে) মনে হয়, আবার যেন সেই জীবন ফিরে না আসে। আমার ছেলেমেয়েরা যেন আমার মতো কষ্ট না পায়। সত্যিই বলছি, ভাবলে খুব…খুব ভয় পাই।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© All rights reserved
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট