সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সংস্কারের দাবিতে ২৪ এপ্রিল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যে অনশনে বসেছেন ঢাবির কয়েকজন শিক্ষার্থী। অনশনে বসা শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি পূর্ণ সংহতি জানাতে রাজু ভাস্কর্যে আসেন জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের সংগঠক সারজিস আলম।
এ সময় তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে পিএসসি সংস্কারের দাবি এবং অভ্যন্তরীণ চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় তিনি শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের দাবির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেন। পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন তিনি।
এ সময় সারজিস আলম বলেন, আজ থেকে ৯ মাস আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই স্থানে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেটাই দেশব্যাপী গণঅভ্যুত্থানে রূপ নিয়েছিল। বাংলাদেশে চাকরিপ্রত্যাশীরাই আগামীর বাংলাদেশ গঠন করবে। যে সহযোদ্ধাদের সঙ্গে ২৪ এর আন্দোলন করেছিলাম, সেই সহযোদ্ধাদের কেন গণঅভ্যুত্থানের পরেও আন্দোলনে নামতে হচ্ছে? অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, কোটা সংস্কারের জন্য হওয়া আন্দোলনের পর পিএসসির মতো প্রতিষ্ঠানে কোনো সংস্কার হয়নি। সংবাদমাধ্যম ও গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, আবেদ আলী চক্রসহ বিভিন্ন চক্রের মাধ্যমে কীভাবে পিএসসিতে দুর্নীতি হয়েছে। এছাড়াও যারা প্রশ্ন পেয়ে ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষায় পাশ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? হাসিনা যেমন একা স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে পারেনি, তেমনই পিএসসির আবেদ আলীও একা নন। এসব চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যৌক্তিক দাবি নিয়ে যখন শিক্ষার্থীরা পিএসসিতে গিয়েছিলেন, তখন তাদের কথা শোনা যেত। কিন্তু তা না করে তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। আজ এই রাজু ভাস্কর্য থেকে বলতে চাই, পিএসসির সামনে আমার সহযোদ্ধাদের ওপর যে বা যারা হামলা করেছে, তাদের অতি দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। তাদের যৌক্তিক দাবি-দাওয়া যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মেনে নেওয়া যায়, সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। যদি পুনরায় গায়ে হাত দেওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তাহলে এর ফলাফল ভিন্ন হবে।
সারজিস বলেন, ইতোমধ্যে পিএসসিতে ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭তম বিসিএসের প্রক্রিয়া চলমান দেখতে পাচ্ছি। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সেগুলো সমাধান না করাকে এই সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছি। পিএসসির সংস্কারের দাবিতে আমাদের সহযোদ্ধারা রাজুতে যে অনশন হচ্ছে, তার পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। ৪৬তম বিসিএসে যারা প্রশ্নপত্র পেয়ে পরীক্ষায় পাস করেছেন, তাদের বাদ না দিয়ে পুনরায় লিখিত পরীক্ষায় বসানো প্রহসনের নামান্তর। এর আগে বিসিএসে রাজনৈতিক যে খেলা হতো, সেই খেলা বন্ধ করতে হবে। অবিলম্বে কালপ্রিটদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
Leave a Reply