ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার গালুয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশে নির্মিত একটি সেতু এখন এলাকাবাসীর ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় দুই বছর ধরে সেতুটি নির্মিত হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় প্রতিদিন হাজারো মানুষকে মই বেয়ে পার হতে হচ্ছে। এতে বৃদ্ধ, নারী, শিশু ও রোগীরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন অন্তত দুই হাজার মানুষ এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করে। এর মধ্যে অনেকেই রোগী, যারা গালুয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে চান। কিন্তু সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় তাদের মই ব্যবহার করে ওপরে উঠতে ও নামতে হয়। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে প্রায় ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুর কাজ শুরু হয় এবং ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
তবে স্থানীয়দের দাবি, প্রকৃতপক্ষে কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে। এরপর সংযোগ সড়ক না করেই মূল সেতুর কাজ শেষ করে ঠিকাদার সাইট ছেড়ে চলে যান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই প্রকল্পের ঠিকাদার ছিলেন ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও যুবলীগ নেতা সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলন। তিনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন এবং একাধিক মামলার আসামি। সম্প্রতি তিনি একটি অস্ত্র মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। এ অবস্থায় প্রকল্পের অসমাপ্ত অংশ কীভাবে সম্পন্ন হবে, তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, সেতু থাকলেও অনেকদিন ধরে আমরা মই বেয়ে সেতু পার হচ্ছি। রোগীরা, স্কুলশিক্ষার্থীরা সবাই কষ্ট পাচ্ছে।
একই এলাকার আবদুর রাজ্জাক বলেন, রোগী নিয়ে মই বেয়ে সেতু পার হতে হয়। গাড়ি তো দূরের কথা, অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত আসতে পারে না স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। আমরা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চাই।
স্থানীয় তরুণ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ঠিকাদার যেহেতু কারাগারে তাই পুনরায় দরপত্র আহ্বান করে সংযোগ সড়ক নির্মাণের ব্যবস্থা করা হোক।
এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা প্রকৌশলী অভিজিৎ মজুমদার বলেন, সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য দ্রুত পুনঃদরপত্র আহ্বান করা হবে। আগামী দেড় মাসের মধ্যে কাজ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ঝালকাঠি এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম সরকার বলেন, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হবে।
Leave a Reply